শাকিব খানের ক্যারিয়ার অাজ প্রায় ২০ বছর। অনেক চরাই-উতরাই পেরিয়েই অাজকের এই জায়গায়। তবে ক্যারিয়ারে রয়েছে বেশকিছু টার্নিং পয়েন্ট – যেগুলো তাকে নিজের শক্ত অবস্থান তৈরী করতে সাহায্য করেছে! একেকটা টার্নিং পয়েন্ট মানেই – একেকটা চ্যালেঞ্জ..! যদি টিঁকে থাকা যায়, তাহলে সফল, অার নাহলে পুরোপুরি ই ব্যর্থ! ঠিক প্রত্যেকটা টার্নিং পয়েন্টেই শাকিব খান সফল।
১/ অামার স্বপ্ন তুমি – ২০০৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মুভি ‘অামার স্বপ্ন তুমি’ বলা যায় এখনো শাকিব খানের ক্যারিয়ারের মাইলফলক হিসেবে রয়েছে। বলা চলে এই মুভি রিলিজের অাগে শাকিবের অবস্খা খুব নগণ্য ছিল, কিন্তু এই মুভি মুক্তির পর, শাকিব খানকে রাতারাতি স্টার বানিয়ে দেয়। এই মুভি মুক্তির পর শাকিব খান বড় সকল প্রোডাকশন হাউজকে বোঝাতে পেরেছেন – তাকে দিয়ে সব ধরনের সিনেমা মেকিং করা সম্ভব! সাথে তাঁর অভিনয় অাজ ও সবার মনে দাগ কেটে গেছে জানিনা এরকম অভিনয় অার কোনোদিন কেউ দেখাতে পারবেনা কিনা। এখনো এই মুভির অভিনয় ই শাকিব খানের ক্যারিয়ারের সেরা অভিনয় হিসেবেই রয়েছে।
২/ কোটি টাকার কাবিন – এই মুভি মুক্তির পর শাকিব খানের নামের পাশে ‘সুপারস্টার’ শব্দটি যোগ করে দেয়..! ২০০৫ সাল পর্যন্ত ও বাংলা সিনেমায় মোটামোটি অশ্লিলতার কিছুটা স্পর্শ ছিল, ২০০৬ সালে একটি সুস্থ ধারার সামাজিক মুভি ‘কোটি টাকার কাবিন’ বাংলা সিনেমার অবস্থাই পুরোপুরি পাল্টে দেয়। সবাই অাবার হলমুখী হওয়া শুরু করে… মুুভিটি বাম্পারহিট ব্যবসাসফল ছিল। ওই বছর সেরা ব্যবসাসফলতার সেরা ১০ মুভিতে শাকিব খানের একাই ৭ টা মুভি ছিল, যার কারনে সবাইকে টেক্কা দিয়ে শাকিব খান সুপারস্টার হয়ে যান এগুলো সবারই জানা।
৩/ অামার প্রাণের স্বামী – শাবনূরের সাথে শাকিব খানের ক্যারিয়ারের পথচলা শুরু হয় ২০০০ সালে ‘গোলাম’ ছবির মাধ্যমে, চলতি বছরেই মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ফুল নেবোনা অশ্রু নেব’ মুভির মাধ্যমে এই জুটি সর্বপ্রথম সুপারহিটের তকমা পায়! কিন্তু নতুন করে বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়/পথচলা শুরু হয় ২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ অামার প্রানের স্বামী’ মুভির মাধ্যমে..! ‘অামার প্রাণের স্বামী’ শাকিব খানকে ঢালিউডে সর্বসম্মতিক্রমে নাম্বার ওয়ান বানিয়ে দেয়। এরপর অার ফিরে তাকাতে হয়নি, একে একে এই জুটির প্রত্যেকটা মুভি ই ছিল ব্যবসাসফল। প্রত্যেকটা মুভি ই ছিল হিট/সুপারহিট/বাম্পারহিট শাকিব-শাবনূর ঢালিউডের অন্যতম জনপ্রিয় জৃুটি।
৪/ প্রিয়া অামার প্রিয়া – এটা শাকিব খানের ক্যারিয়ারের অন্যতম ব্যবসাসফল মুভি। শুধু তাইনা ঢালিউডপাড়ার ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যবসাসফল মুভি! ২০০৮ সালে ‘প্রিয়া অামার প্রিয়া’ মুক্তির পর সিনেমাপাড়ায় পুরো হৈচৈ পড়ে যায়..! শাকিব খানের ক্যারিয়ার পুরোপুরি পাল্টে যায়! প্রযোজনা, পরিচালকেরা শাকিব খানের পিছনে শিডিউলের জন্য লাইন ধরতে শুরু করে। এই মুভিতে শাকিব খানের ফ্যাশন তরুন সমাজের কাছে এখনো সেরা! এই মুভি এক অপ্রতিদ্বন্ধী শাকিব খানকে গড়ে তুলে। এই সিনেমার মাধ্যমে শাকিব খান প্রমাণ করছিলেন তাঁর সিনেমায় নায়িকা, পরিচালক কোনো ফ্যাক্ট না! এই মুভির সাফল্যের পর শাকিব খান প্রথমবারের মত ৪০ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক হাকান। যা ঢালিউডে এক বিরল ইতিহাস
৫/ নাম্বার ওয়ান শাকিব খান – অামার মতে এই মুভিটি শাকিব খানের ক্যারিয়ারের এক কলঙ্ক অধ্যায়..! এটা দিয়েই শাকিব খানের ক্যারিয়ারের ইমেজ নষ্ট হতে শুরু করে। তবে সফলতায় ছিল অাকাশচুম্বী… এই মুভির সফলতার পর প্রমাণিত হয় – শাকিব খানের অাসল নাম ইউজ করে যে সফলতা এসেছে তা অতীতের কোনো নায়ক-নায়িকারা দেখাতে পারেনি। নিজের নাম দিয়ে মুভি করে একমাত্র শাকিব খানই ঢালিউডে সর্বপ্রথম অাকাশছোঁয়া সফলতা এনে দিয়েছেন
৬/ ২০১০-১৩ পর্যন্ত বলতে গেলে শাকিব খানের ক্যারিয়ারের ইমেজের খু্ব বাজে সময় যাচ্ছিল! শাকিব-অপু জুটিতে অডিয়্যেন্স এতটাই বিরক্ত হয়েছিল যে সবাই হল বিমুখী হয়ে গিয়েছিল! অতঃপর ‘পাওয়ার’র ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডরের অাকর্ষনীয় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে শাকিব খান বোঝাতে সক্ষম হন – তাকে দিয়ে ও প্রযুক্তি নির্ভর ও সময়োপযুগী কাজ করানো সম্ভব। এরপরে জনপ্রিয়তা অাবারো বাড়তে শুরু করে।
৭/ শিকারী – ‘শিকারী’ কে বলা হয় শাকিব খানের ক্যারিয়ারের নতুন জীবন প্রথমবারের মত এই মুভিতে কলকাতায় পা রাখেন শাকিব খান..! নতুন করে এনে দেয় অাবারো অাকাশছোঁয়ার এক সফলতা! নতুন লুক, ফিটনেস, এককথায় সবকিছুতেই নতুনত্ব। এই মুভির মাধ্যেমে শাকিব খান তাঁর ভক্তদের রুচি পাল্টে দেন… প্রথম যৌথ কাজ করেই জিতে নেন মেরিল প্রথম অালো পুরস্কার, সাথে কলকাতার ও বর্ষসেরা কিছু পুরস্কার “শিকারী’র সফলতার কথা বললে খুব কম হয়ে যাবে। পরবর্তীতে একের পর এক কাজ করে সফল হতে থাকেন।
উপরে উল্লেখিত, ৭ টি টার্নিং পয়েন্ট ছিল শাকিব খানের ক্যারিয়ারের প্রাণ..! বর্তমানে শাকিব খানের ক্যারিয়ার নিয়ে লিখতে ও কেমন জানি লাগে। কারন, শাকিব খানের কিছু ভুলের কারনে ক্যারিয়ার দিন দিন নষ্ট হতে চলেছে এবং তাঁর ভক্তরাই বিরক্ত….
জানিনা এরকম টার্নিং পয়েন্ট শাকিব খানের ক্যারিয়ারে নতুন করে অার জন্ম নিবে কিনা তবে একজন ভক্ত হিসেবে এখনো ভাল কিছু অাশা করি তাঁর কাছ থেকে..! অাশা করছি, খুব শীঘ্রই শাকিব খানের কাছ থেকে ভাল কিছু পেতে যাচ্ছি।
উল্লেখ : এই বিশেষ প্রতিবেদনটি মাসুম রানা আমাদের লিখে পাঠিয়েছে।